Food Guides
মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা

মধু হলো প্রকৃতি থেকে পাওয়া এক অমূল্য সম্পদ।
মৌমাছি এবং অন্যান্য পতঙ্গ কর্তৃক ফুলের নির্যাস হতে সংগৃহীত এক প্রকার মিষ্টি ও ঘন তরল পদার্থ হলো মধু ।যার প্রধান উপাদান হচ্ছে গ্লুকোজ ও ফ্রুক্টোজ । এটি বিভিন্ন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ভেষজ তরল যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। মধুর বিশেষ গুণ হলো এটি কখনো নষ্ট হয় না । বহু বছর পর ও এর গুনাগুণ একই রকম থাকে ।
বিভিন্ন খাদ্য তৈরির করতে অনেকেই মধুর স্বাদ , মিষ্টি ও গন্ধের জন্য চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পছন্দ করে।
যদি স্বাস্থ্যগুণ ও পুষ্টিগুণ বিবেচনা করে খাবারের একটি তালিকা তৈরি করা হয় তাহলে মধু থাকবে সবার প্রথমে। তবে কোন খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া মঙ্গলময় না। প্রতিটি খাবারে যেমন উপকারিতা আছে তেমনি অতিরিক্ত খেলে শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
মধু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জানবো প্রথমে জেনে নেই এর মধ্যে থকা পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে:
পুষ্টি উপাদান :
মধুতে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান থাকে ,যা আমাদের জন্য খুবই উপকারী। ফুলের নির্যাস হতে সংগৃহীত মধুতে থাকে ২৫ থেকে ৩৭ শতাংশ গ্লুকোজ,যা শরীরে শক্তি যোগাতে সহায়তা করে।.০৫ থেকে ৩.০ শতাংশ সুক্রোজ এবং ৫ থেকে ১২ শতাংশ মন্টোজ মধুতে পাওয়া যায়।
এতে চর্বি ও প্রোটিন নেই কিন্তু ২২ শতাংশ অ্যামাইনো এসিড, ২৮ শতাংশ খনিজ লবণ, এবং ১১ ভাগ এনজাইম আছে। যা আমাদের শরীরের পেশী ও কোষের পুনর্গঠন, শরীরের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রেখে পাচনতন্ত্রকে রক্ষা করে সুস্বাস্থ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।১০০ গ্রাম মধুতে ২৮৮ ক্যালরি থাকে, যা শরীরের শক্তির উৎস হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মধু খাওয়ার উপকারিতা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে:
প্রাকৃতিক ভাবে মধুতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ব্যাকটিরিয়াল উপাদান। ফলে নিয়মিত মধু খেলে ঠান্ডা ,কাশি এবং গলা ব্যথায় উপকার পাওয়া যায় এবং আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
হজমে সহায়তা:
মধুতে থাকা এনজাইম পাচনতন্ত্রকে সুস্থ্য রেখে হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এতে থাকা শর্করা সরাসরি রক্তে প্রবেশ করে এবং মূহূর্তের মধ্যেই ক্রিয়া করে। তাই পেটের সমস্যা, গ্যাস্ট্রিক এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এটি বিশেষ উপকারি। নিয়মিত ১ চা–চামচ মধু ভোরবেলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যতা এবং অম্লত্ব দূর হয়।
রক্তশূন্যতায়:
মধুতে রয়েছে বেশি পরিমাণে কপার, লৌহ এবং ম্যাঙ্গানিজ,যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। ফলে রক্তশূন্যতায় ঔষধের কাজ করে এবং শরীরের শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যা সমাধানে :
যারা অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য একটি প্রাকৃতিক ঔষধ হলো এই মধু।
রাতে ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পানির সাথে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে রাতে ঘুম খুব ভালো হবে।
রূপচর্চায়:
রূপচর্চায় এটি একটি উপকারী উপাদান। এটি প্রাকৃতিক ভাবেই ময়েশ্চারাইজার এবং জীবাণু নাশক , যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে এবং ত্বকে থাকা ব্রনের ক্ষত সারাতে সহায়তা করে।
চুলের যত্নে:
মধুতে গ্লুকোজ অক্সিডেস এনজাইম রয়েছে। যা চুলের ক্ষতি রোধ করতে এবং মাথার স্ক্যাল্প সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। চুল রুক্ষ হলে মধু মিশানো হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলে চুল নরম ও কোমল হয়।
ওজন কমাতে :
মধুতে চর্বি এবং প্রোটিন নেই। তাই মধু খেলে ওজন বাড়ে না। যারা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তারা মিষ্টি জাতীয় খাবারে চিনির পরিবর্তে মধু ব্যবহার করতে পারেন।
যে কোন খাবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত খেলে কিছু অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। তেমনি মধু অতিরিক্ত খেলে ও শরীরে কিছু ক্ষতি হতে পারে।
মধু খাওয়ার কিছু অপকারিতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো
১. এতে আছে ক্যালরি যা অতিরিক্ত খেলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাওয়ায় সম্ভাবনা আছে।
২. অতিরিক্ত মধু খেলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। কারণ এতে আছে শর্করা যা রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
৩.মধু খাওয়ার পর যদি সঠিক ভাবে দাঁত পরিষ্কার করা না হয় ,তাহলে এতে থাকা শর্করা দাঁতে জমে দাঁত ক্ষয়ের কারন হতে পারে।
৪.মধুতে বোটুলিজম ব্যাকটেরিয়া থাকে, যা এক বছরের কম শিশুদের জন্য ক্ষতিকর।
Food Guides
কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা

প্রকৃতির এক বিস্ময়কর বীজের নাম কালোজিরা।প্রতিদিনের রান্নায় হয়তো প্রয়োজন পড়ে না, তবে প্রায় সব রান্নাঘরে খুঁজে পাওয়া যাবে এই ছোট্ট বীজ। মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ওষুধ ধরা হয় কালোজিরাকে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-ও বলেছেন নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ার জন্য।
আমরা কালোজিরা নামে চিনি তবে এর বেশ কিছু নাম রয়েছে , যেমন- কালো কেওড়া, রোমান করিয়েন্ডার বা রোমান ধনে, নিজেলা, ফিনেল ফ্লাওয়ার, হাব্বাটুসউডা ও কালঞ্জি ইত্যাদি। এর বৈজ্ঞানিক নাম হলো nigella sativa।
কালো জিরায় রয়েছে ভিটামিন, স্ফটিকল নাইজেলোন, অ্যামাইনো অ্যাসিড, স্যাপোনিন, ক্রুড ফাইবার, প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, আয়রন, সোডিয়াম, পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম ।
এর স্বাস্থ্য উপকারিতা অপরিসীম।কিন্তু ঠিক কী উপকার করে এটি সবার নিশ্চয়ই তা জানা নেই। এর উপকারিতা সম্পর্কে ধারনা থাকলে খাবারের সাথে কালোজিরা যুক্ত করে নিতেন।
আসুন কালোজিরার কয়েকটি উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই ;
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ;
কালিজিরায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেল যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। প্রতিদিন কালোজিরা খেলে শরীরের সকল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। প্রতিদিন ১ চামচ কালোজিরা অথবা কয়েক ফোটা কালোজিরার তেল ১ চামচ মধুর সাথে সেবন করলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে।
সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে ;
সর্দি-কাশিতে আরাম দিবে যদি এক চা চামচ কালোজিরার তেলের সঙ্গে সমপরিমাণ মধু মিশিয়ে প্রতিদিন কয়েক বার খেতে পারেন। এভাবে খেলে এবং ঘাড়ে ও মাথায় মালিশ করলে সর্দি-কাশিতে আরাম পাবেন। এছাড়া নরম কাপড়ে কালোজিরা বেঁধে শুঁকলে শ্লেষ্মা তরল হয়ে ঝরে পড়ে নাক পরিষ্কার থাকবে। তাছাড়া এক চা চামচ কালোজিরার সাথে তিন চা চামচ মধু ও দুই চা চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দিকাশি কমে যায় ।
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রেগের জন্য;
হাঁপানি বা শ্বাসকষ্টজনিত রোগের ক্ষেত্রে কালোজিরা হতে পারে আপনার উত্তম বন্ধু। হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ থেকে দ্রুত উপশম পেতে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় কালোজিরার ভর্তা রাখুন।
ডায়বেটিক নিয়ন্ত্রণে:
ডায়াবেটিস রোগের উপশম হিসেবে ব্যাবহৃত হয় কালোজিরা। এক গ্লাস পানির সাথে দৈনিক খালি পেটে এক চিমটি কালোজিরা খেয়ে দেখুন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে :
শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিতে কালোজিরা অনেক উপকারী। এমনকি মস্তিষ্কের সুস্থতা ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধির জন্য ও কাজ করে কালোজিরা। প্রতিদিন শিশুদের কালোজিরা খাওয়ার অভ্যাস করলে তাড়াতাড়ি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধি হয়।তবে দুই বছর বয়স হওয়ার আগে শিশুকে না খাওয়ানো উচিত । কিন্তু বাহ্যিক ভাবে ব্যবহার করা যায়।
হজমশক্তি বাড়াতে :
বদহজমের সমস্যা সমাধান করে আপনার হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে কালোজিরা।এক থেকে দুই চামচ পরিষ্কার কালোজিরা বেটে পানির সাথে মিশিয়ে দৈনিক দুই থেকে তিন বার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এভাবে নিয়মিত এক মাস খেলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং বদহজমের সমস্যা দূর হবে।
বিশেষ সতর্কতা
১.গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কালোজিরা খাওয়া যাবে না।কারন অতিরিক্ত খেলে গর্ভপাতের কারন হতে পারে।
২.দুই বছরের নিচে শিশুদের কালোজিরার তেল খেতে দেয়া উচিত নয়।কারন শিশুরা সহজে হজম করতে পারে না
Food Guides
লেবুর আছে অনেক উপকারিতা

লেবু হলো আমাদের সবার পরিচিত সুস্বাদু, রসালো ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি সুপারফুড।এই ছোট ও সবুজ সাইট্রাস ফলটি সহজে পাওয়া যায়, খুব উপকারী এবং এতে ক্যালোরি কম থাকে। লেবুর মধ্যে রয়েছে উচ্চ মাত্রায় কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন বি৬, পটাসিয়াম, জিঙ্ক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং জিঙ্ক।
লেবু খেতে টক তাই এটা অন্য খাবারের সাথে মিলিয়ে খাওয়া হয়।বিশেষ করে বাঙালির ভাতের থালায় এক টুকরো লেবু থাকলে তো কথাই নেই।আবার লেবুর শরবত, লেবুর চা-ও বেশ জনপ্রিয়।বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার ভোর যদি হয় খালি পেটে পানি খেয়ে, তাহলে খুব ভালো কিন্তু এর সঙ্গে যদি যোগ করেন কুসুম গরম লেবু–পানি, তবে তো উড়ন্ত সূচনা।খালি পেটে গরম পানি পান হজমশক্তি বাড়ায়, জোগায় শক্তি। তার সঙ্গে নানা স্বাস্থ্যসুবিধা আছে। এর সঙ্গে মাত্র এক চা–চামচ লেবুর রস যোগ করলে এই পানীয় আপনাকে রাখবে দিনভর সতেজ।
লেবু শরীরের টক্সিক পদার্থ বের করে দেয়,ফলে যেকোনো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। শরীরের অনেক জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে লেবুর পানি। তাছাড়া শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে লেবুর রস মেশানো পানি বেশ কার্যকর। প্রতিদিন লেবু বা লেবু পানি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
লেবুতে আছে ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেম অর্থাৎ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সর্দি ও ফ্লুর লক্ষণ সৃষ্টিকারী জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে। তাই এ ধরনের সমস্যায় সব সময় গরম পানি ও লেবু খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এক গ্লাস হালকা গরম পানির সঙ্গে সামান্য লেবুর রস ও এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এই পানীয় সর্দি ও কাশি দূর করতে সাহায্য করবে।
লেবুতে আছে দ্রবণীয় ফাইবার যা আমাদের অন্ত্রের জন্য বেশ সহায়ক। এটি অন্ত্রের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে এবং হজমের উন্নতি করতে সাহায্য করে। লেবুতে থাকা প্রধান ফাইবার পেকটিন, যা অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে সহায়তা করে এবং চিনি ও স্টার্চের হজমের হারকে সহজ করে।যে কারণে লেবু খেলে হজমশক্তি ভালো হয়।এতে হজমের নানা সমস্যার উপকার হয়।
কুসুম গরম পানি আমাদের হজমপ্রক্রিয়া উদ্দীপিত করে,সাথে লেবুর রস যোগ করলে পিত্তরসের উৎপাদন বাড়ায়। ফলে কুসুম গরম লেবু–পানি শরীরের খাদ্য ভাঙতে সাহায্য করে হজমের সহায়তা করে।
ওজন কমায়
লেবুতে আছে ফাইবার যা দীর্ঘ সময়ের জন্য পূর্ণ বোধ করতে সহায়তা করে। যার ফলে বার বার খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা কমে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, লেবুপানি পান করলে ওজম দ্রত কমে। কারণ লেবুতে রয়েছে পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট এবং পেকটিন নামের একধরনের আঁশজাতীয় উপাদান থাকে, যা আমাদের ক্ষুধা কমায়।ইঁদুরের ওপর করা পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই উপাদানটি স্থূলতা প্রতিরোধ করে ও অতিরিক্ত ওজন নিয়ন্ত্রণ করে। যখন এর সঙ্গে গরম পানি যুক্ত হয়, তখন তা শরীরকে আরও পরিপূর্ণ থাকার অনুভূতি দেয়।
কুসুম গরম লেবু–পানি ওজন কমাতে ভূমিকা রাখে।ওজন বেড়ে গেলে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়।এক গ্লাস পানিতে মধুর ও লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে তা শরীরের জন্য বিস্ময়কর ভাবে কাজ করে। এটি আপনাকে অপ্রয়োজনীয় খাবার থেকে বিরত রাখবে, ফলে ওজন বৃদ্ধির ভয় থাকবে না।
জল ধারণ কমায়
লেবু প্রাকৃতিকভাব মূত্রবর্ধক হিসেবে কাজ করে। এটি আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয় । পিএইচ মাত্রার ভারসাম্য ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এর যার ফলে শরীর ফোলার সমস্যা কমে যায়। নিয়মিত ও পরিমিত লেবু আপনাকে সুস্থ রাখতে কাজ করবে।
ত্বক ভালো রাখে
লেবুতে আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্যে যা ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। চেহারায় বয়সজনিত ছাপ কমাতে সাহায্য করে লবুর রস।লেবুতে আছে ভিটামিন সি যা ত্বকের বলিরেখা, বার্ধক্যজনিত শুষ্ক ত্বক এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির প্রভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে। ত্বক আর্দ্রতা হারিয়ে শুষ্ক হয়ে গেলে দেখা দেয় বলিরেখার প্রবণতা । সকালে এক গ্লাস লেবুপানি এই সমস্যা কমিয়ে দেয়।
লেবুর রস বের করে নেয়ার পর খোসাও ঘষতে পারেন ত্বকে। এতে ত্বক পরিষ্কার হওয়ার পাশাপাশি মৃত কোষ নষ্ট হয় ও ত্বক ঝকঝকে হয়ে ওঠে। তাছাড়া লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে শরীরের কোষ ধ্বংসকারী ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই করে, ত্বকের দাগ দূর করে এবং ত্বককে করে স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল ও দীপ্তিময়।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে হালকা গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে পান করলে পাচনতন্ত্র সতেজ থাকবে। এ ছাড়া লেবুপানি পান করলে অনায়াসে খুব সহজে খাবার হজম হবে।এটি দীর্ঘদিনের বদহজমের সমস্যাও দূর করতে সাহায্য করে।লেবুতে বিদ্যমান সাইট্রিক অ্যাসিড কোলন, পিত্তথলি ও লিভার থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায়তা করে। তাছাড়া কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসের সমস্যা দূর করতে পারে।
কিডনির পাথর প্রতিরোধ
ইদানিং অনেকেই কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভোগেন। কিন্তু পাথর প্রতিরোধ ও নির্গত করার জন্য লেবুপানি কাজ করে।এর পাশাপাশি এতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড যা পাথর বের করে দেয়ার ক্ষেত্রে কার্যকরী। লেবুতে আছে খুব দরকারি সাইট্রিক অ্যাসিড যা কিডনিতে ‘ক্যালসিয়াম অক্সালেট’ নামক পাথর গঠনে বাধা দেয়।সাইট্রেট, সাইট্রিক অ্যাসিডের একটি উপাদান, যা প্রস্রাবের অম্লত্ব হ্রাস করে। এমনকি এটি ছোট ছোট পাথর ভেঙ্গে ফেলতেও সহায়তা করতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে
একটি গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট যৌগগুলো রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ইনসুলিনের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
লেবুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মতো উপকারী উপাদান। এতে ‘জিআই’ অর্থাৎ গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণও অনেক বেশী ।ইনসুলিনের মাত্রা বাড়াতেও লেবু খুব উপকারী। প্রতিদিন লেবু পানি পান করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে
ভিটামিন সি সংবহনতন্ত্রের রোগ, রক্তচাপ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।আর লেবু ভিটামিন সি-এর একটি ভালো উৎস। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি মাঝারি লেবুর রসে প্রায় ২৬.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে।আর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন সি-এর পরিমাণ দৈনিক ৬৫ থেকে ৯০ মিলিগ্রাম। আর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে লেবুতে থাকা পটাশিয়াম ও সোডিয়াম সাহায্য করে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের ডায়েটে রাখা হয় লেবু। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা অনুসারে, নিয়মিত লেবু খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে।
মুখের দুর্গন্ধ রোধে
মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে লেবুপানি উপকারী। সকালে এক গ্লাস লেবুপানি পান করে নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ রোধ করতে পারে।লেবু লালাগ্রন্থিকে উদ্দীপিত করে ফলে মুখগহ্বর শুষ্ক হয় না ও ব্যাক্টেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধর আশঙ্কা কমে যায়। তাই রসুন, পেঁয়াজ বা মাছের মতো তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে তৈরি হওয়া নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ দূর করতে লেবুপানি সহায়ক হিসাবে কাজ করে।
লেবু পানি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। জার্নাল অফ চিরোপ্রাকটিক মেডিসিন দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণা অনুসারে, ভিটামিন সি এলডিএল বা ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া লেবুতে ফ্ল্যাভোনয়েডও রয়েছে, যা ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এলডিএল-এর মাত্রা কমায়। গবেষণা অনুসারে, এক মাস ধরে প্রতিদিন ২৪ গ্রাম সাইট্রাস ফল যেমন লেবুর নির্যাস গ্রহণ করলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়।
প্রতিদিন কতটা লেবু খাওয়া নিরাপদ?
দিনে দুই থেকে তিনটি লেবু (প্রায় চার থেকে ছয় টেবিল চামচ) খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।সাইট্রাস ফল যেমন লেবু পরিমিতভাবে খাওয়া উচিত। প্যান আফ্রিকান মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, অতিরিক্ত লেবু খেলে এর উচ্চ মাত্রার সাইট্রিক অ্যাসিডের কারণে এনামেল ক্ষয় হতে পারে। তাছাড়া লেবুতে থাকে টাইরামিন যা মাইগ্রেনের রোগীর ক্ষেত্রে মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
Food Guides
রোজায় সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন

সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ও নিয়মিত ঘুম অত্যন্ত জরুরি।স্বাস্থ্যকর খাবার ও সঠিক রুটিন মেনে চলুন, পরিবারের সঙ্গে সুস্থভাবে রোজা পালন করুন।
ইফতারে থাকুক স্বাস্থ্যকর খাবার (পানীয়)
১. ইফতারে ফল, ফলের শরবত (লেবু, আনারস,তরমুজ বা বেল) রাখুন। শরবত অবশ্যই চিনি ছাড়া তৈরি করবেন।ডাবের পানি ,দই ও ফলের স্মুদি,আখের গুড়ের শরবত,লেবু-মধু পানি ,লাচ্ছি তোকমা বা ইসুবগুলের শরবত বা চিড়ার শরবত ও রাখতে পারেন।যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন তারা- ইসুবগুল, তোকমা দিয়ে তৈরি শরবত খেলে খুব উপকার পাবেন।
মূল স্বাস্থ্যকর খাবার
তালিকায় ফ্রুট বা সবজির সালাদ, যেকোনো একটি রাখুন। এ ছাড়া পাউরুটি টোস্ট করে ডিমসেদ্ধ দিয়ে স্যান্ডউইচ তৈরি করে নিতে পারেন। বাড়িতেই চিকেন স্যুপ, চিকেন ফ্রাই তৈরি করে নিন। তাছাড়া ঘরে তৈরি খিচুড়ি ও ডিম সবজি ও মাংসের খিচুড়ি রুটি, সবজি ও ডিম ,লাইট ভাত ও তরকারি ,এগ ভেজিটেবল নুডলস,l দই চিড়া হবে খুবই স্বাস্থ্যকর খাবার।
ইফতারের পর দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন। চা বা কফি জাতীয় ক্যাফেইন পান করলে বারবার প্রস্রাব হওয়ার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা হয়। এ ছাড়া অ্যাসিডিটি হওয়ারও এটি একটি কারণ। ইফতার থেকে সেহরি পর্যন্ত শরীর হাইড্রেট রাখা অত্যন্ত জরুরি।
২.স্বাস্থ্যকর রাতের খাবার
ইফতারে বেশি খেয়ে রাতের খাবার এড়িয়ে চলা উচিত নয়। ইফতার পরিমিত পরিমাণে খেয়ে তারাবির নামাজের পর হালকা রাতের খাবার খাওয়া উচিত। সুস্থ থাকতে ও গ্যাসের সমস্যা এড়াতে খেতে পারেন চিকেন ভেজিটেবল স্যুপ,
দুধ ও সিরিয়াল ,রুটি, সবজি ও ডিম
ওটস ও দুধ ,সবজি, মাছ বা মুরগির হালকা রান্না করা খাবার।
খাবার গ্রহণের ১ ঘণ্টা আগে ও পরে পানি পান করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।তাই সাহ্রির সময় ঘুম থেকে উঠেই পানি পান করে নেবেন।আর সাহ্রি খেয়েই বেশি পানি পান করবেন না।খাওয়ার পর পরই পানি পান হজমকে ধীর গতির করে তোলে। পাচক রসের সাথে পানি মিশ্রিত হয়ে এমন হয়। এতে হজম প্রক্রিয়া দুর্বল হয়ে
৩.সেহেরি
রোজায় অনেকেই সেহরি খেতে চান না বা অনেক আগেই খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এতে রোজার সময় দীর্ঘ হওয়ায় শরীরে দুর্বলতা, ক্লান্তি, পানির পিপাসা, মাথাব্যথা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা হতে পারে। তাই পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর সেহরি গ্রহণ করা উচিত।
সেহরির জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন ভাত, মাছ, নরম সবজি ও মুরগি ,রুটি, দুধ ও কলা ,ওটস বা সিরিয়াল ।সাহ্রিতে তরকারিতে তেল ও ঝাল কম দিন।
-
beauty tips2 months ago
চুল পড়া রোধ করার কিছু ঘরোয়া উপায়
-
beauty tips2 months ago
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কয়েকটি ঘরোয়া ফেসপ্যাক
-
Fitness2 months ago
ওজন কমানোর কিছু কার্যকরী উপায়
-
Food Guides2 months ago
রোজায় সুস্থ থাকতে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করুন
-
beauty tips2 months ago
অ্যালোভেরার আছে নানা গুণ
-
Personal Development2 months ago
এক ফালি আদার আছে অনেক গুণ
-
Uncategorized10 months ago
The Advantages of Ice facial
-
Mindfulness6 months ago
Mindfulness